পবিত্র ইঞ্জিল শরিফ পয়লা ছিপারা
আল-মথি
ছিলটি ভাষায় তরজমা
পরিচিতি
আল-মথি ছিপারার মুল তালিম অইলো, হজরত ইছা আল-মসী একজন বাদশা। আল্লা পাকর বওয়াল করা বাদশা। তাইন ই দুনিয়াত তশরিফ আনিয়া মানষরে দাওত দিলা, তান উপরে ইমান আনার লাগি। যেরা তান উপরে ইমান আনবা, এরা অইবা আল্লার নয়া জাতি। এরার নাম অইবো, আল্লার প্রজা বা বেহেস্তি বাদশাইর জন, আর হজরত ইছা আল-মসীউ অইলা অউ বাদশাইর মালিক। আল্লা পাকে তানরে বওয়াল করলা, যাতে রোজ হাশরর দিন তাইন দুনিয়ার হক্কল মানষর বিচার করইন।
অউ আল-মথি ছিপারা তিলাওত করলে, আমরা হজরত ইছার তালিমর মুল্যবান হকল বয়ানির বিস্তারিত দেখমু। আমরা দেখমু, হজরত ইছার জনম কিলা অইছিল, তান দুনিয়াবি বাবা মানি বিবি মরিয়মর (আ:) জামাই হজরত ইউছুফর জবানবন্দি পাইমু। অউ ছিপারাত আমরা পাইমু, হজরত ইছায় কিলা কাম-কাজ করছইন, কেমনে জিন্দেগি কাটাইছইন, তাইন কুয়াই থাকি বল-শক্তি পাইতা। আমরা আরো দেখমু, বউত জমানা আগে আল্লা পাকে হজরত মুছা (আ:) আর হজরত দাউদর (আ:) পবিত্র তৌরাত আর জবুর শরিফর মাজে, এরলগে বাদ-বাকি আরো নবী-রছুল অকলর গেছে যেতা যেতা বাতাইছইন, হজরত ইছার জমানাত আইয়া তান আতো অতা হকলতা ফলিছে।
আল-মথি ছিপারার ৫ রুকু ১৭, ২০ আয়াতো আছে, হজরত ইছায় কইরা, “তুমরা ইখান মনো করিও না, আমি তৌরাত কিতাব আর নবী অকলর ছহিফা বাতিল করাত আইছি। আমি তো ইতা বাতিল করাত নায়, বরং পুরা করাত আইছি। হুনো, আমি তুমরারে কইরাম, আলিম-উলামার আমল থাকিও তুমরার আমল যুদি আরো ভালা না অয়, তে কুনুমন্তেউ বেহেস্তি বাদশাইত হামাইতায় পারতায় নায়।”
আর ১১ রুকু ২৮-৩০ আয়াতো আছে, হজরত ইছায় কইরা, “ভার-বোঝা বইতে বইতে তুমরা যেরা হেরান অইগেছো, তুমরা হকল আমার গেছে আও, আমি তুমরারে আরাম দিমু। আমার জুয়াল তুমরার কান্দো তুলো আর আমার গেছ থাকি তালিম লও, তেউ তুমরার আরাম অইবো। আমার জুয়াল বইয়া নেওয়া সুজা, আমার দেওয়া ভার খুব পাতলা। আমার মিজাজ খুব নরম আর ঠান্ডা।”
লেখক পরিচিতি আর সময়
আল্লা পাকর হুকুম মাফিক অউ ছিপারা লেখছইন, হজরত ইছা আল-মসীর সাহাবি হজরত মথি (রা:)। হজরত ইছার উপরে ইমান আনার আগে তান পেশা আছিল খাজনা আদায় করা। তাইন মানষর গেছ থাকি খাজনা তুলিয়া রোমান সরকারর আতো সমজাই দিতা। হজরত ইছায় তানরে ইমানর দাওত দিলে তাইন ইমান আনিয়া ইছা আল-মসীর উম্মত অইলা। আর হজরত ইছায় বেহেস্তো তশরিফ নেওয়ার অনুমান ২৫-৩৫ বছর বাদে অউ ছিপারা কিতাব আকারে তাইন লেখছইন।
এরমাজে আছে,
(ক) হজরত ইছার পরিচয় আর পয়লা জিন্দেগি ১-২ রুকু
(খ) হজরত ইছায় কাম শুরু করলা ৩-৪ রুকু
(গ) পাড়র পেটো হজরত ইছার তালিম ৫-৭ রুকু
(ঘ) হজরত ইছার দশ কেরামতি ৮-৯ রুকু
(ঙ) বারোজন সাহাবিরে পছন্দ আর তালিম ১০ রুকু
(চ) হজরত ইছারে সন্দয় আর বিরুধিতা করা ১১-১২ রুকু
(ছ) হজরত ইছার বাতাইল সাত কিচ্ছা ১৩:১-৫২ আয়াত
(জ) হজরত ইছায় কেনে তশরিফ আনছইন ১৩:৫৩-১৭:২৭
(ঝ) উম্মতর লাগি হজরত ইছার জরুরি তালিম ১৮ রুকু
(ঞ) সমাজর মানষর লাগি হজরত ইছার তালিম ১৯-২২ রুকু
(ট) নেতা অকলরে হজরত ইছার হুশিয়ারি ২৩-২৫ রুকু
(ঠ) হজরত ইছার উফাত আর জিন্দা অওয়া ২৬-২৮ রুকু
হজরত ইছার পরিচয় আর পয়লা জিন্দেগি (১:১-২:২৩)
1
হজরত ইছা আল-মসীর খান্দান
1 হজরত ইছা আল-মসী অইলা দাউদ নবীর বংশধর, আর দাউদ অইলা হজরত ইব্রাহিমর বংশধর। ইছা আল-মসীর খান্দানর পরিচয় অইলো,
2 হজরত ইব্রাহিমর পুয়া হজরত ইসহাক, ইসহাকর পুয়া হজরত ইয়াকুব, ইয়াকুবর পুয়া এহুদা আর তান ভাইয়াইন, 3 এহুদার পুয়াইন ফিরোজ আর জারাহ, এরার মাʼর নাম তামার। ফিরোজর পুয়া হাছির, হাছিরর পুয়া রায়াম, 4 রায়ামর পুয়া আমিনাদাব, আমিনাদাবর পুয়া নাহিশ, নাহিশর পুয়া সেলিম, 5 সেলিমর পুয়া বোয়াজ, তান মাʼর নাম রাহবা। বোয়াজর পুয়া উবায়েদ, তান মা অইলা রুত। উবায়েদর পুয়া ইয়াছ, 6 ইয়াছর পুয়া বাদশা দাউদ।
দাউদর পুয়া নবী সুলাইমান, এন মা আছলা উরিয়ার ড়াড়ি বউ বাতছেবা। 7 সুলাইমানর পুয়া রহবিয়াম, রহবিয়ামর পুয়া আবিয়া, আবিয়ার পুয়া আসা, 8 আসার পুয়া যিহোছাফট, যিহোছাফটর পুয়া উরাম, উরামর পুয়া উজিয়া, 9 উজিয়ার পুয়া যোথম, যোথমর পুয়া আহাজ, আহাজর পুয়া হিজকিয়া, 10 হিজকিয়ার পুয়া মানশা, মানশার পুয়া আমন, আমনর পুয়া ইউশিয়া, 11 ইউশিয়ার পুয়া ইয়াকুনিয়া আর তার ভাইয়াইন। ইসরাইল জাতিরে বাবিল দেশো বন্দি করি নেওয়ার বালা এরার জনম অইছিল।
12 ইসরাইল জাতিরে বাবিল দেশো বন্দি করি নেওয়ার বাদে ইয়াকুনিয়ার পুয়া সালতিয়েলর জনম অইছিল। সালতিয়েলর পুয়া জেরবাবিল, 13 জেরবাবিলর পুয়া আবীহুদ, আবীহুদর পুয়া ইলিয়াকিম, ইলিয়াকিমর পুয়া আজর, 14 আজরর পুয়া ছাদিক, ছাদিকর পুয়া আখিম, আখিমর পুয়া এলিহুদ, 15 এলিহুদর পুয়া আলি-আজর, আলি-আজরর পুয়া মতিন, মতিনর পুয়া ইয়াকুব, 16 ইয়াকুবর পুয়া ইউছুফ, অউ ইউছুফ অইলা বিবি মরিয়মর জামাই। বিবি মরিয়মর পেটো হজরত ইছার জনম অইছিল, এনরে ডাকা অয় আল-মসী।
17 অউ লাখান হজরত ইব্রাহিম থাকি দাউদ নবী পর্যন্ত চৌদ্দ ছিড়ি। দাউদ নবী থাকি বাবিলো বন্দি করি নেওয়া পর্যন্ত চৌদ্দ ছিড়ি। বাবিলো বন্দি অওয়া থাকি আল-মসী পর্যন্ত চৌদ্দ ছিড়ি।
হজরত ইছা আল-মসীর জনম
18 ইছা আল-মসীর জনম অইছিল অউ লাখান। ইউছুফ নামর এক জনর লগে বিবি মরিয়মর শাদি ঠিক অইছিল, অইলে তারা একলগে মিলা-মিশা করার আগেউ আল্লার পাক রুহর কুদরতি বলে মরিয়মর পেটো হুরুতা আইলো। 19 ইউছুফ আছলা হক মানুষ, মরিয়মর পেটো হুরুতা আছে, ই খবর হুনিয়া তাইন মরিয়মরে মানষর ছামনে শরম দিতা চাইলা না, এরদায় মনে মনে ঠিক করলা, লুকাইয়া ই বিয়া ভাংগিলিতা।
20 তাইন যেবলা অলাখান চিন্তা কররা, অউ সময় মাবুদর এক ফিরিস্তায় খোয়াবর মাজে তানরে দরশন দিয়া কইলা, “ও ইউছুফ বিন দাউদ, তুমি মরিয়মরে শাদি করতে ডরাইও না। তান পেটো যে হুরুতা আইছে, ইতা তো পাক রুহর কুদরতি বলেউ অইছে। তান ঘরো এক পুয়ায় জনম লইবা। 21 তুমি ই পুয়ার নাম রাখিও ইছা। কারন ই নামর মানি তরানেআলা, এইন নিজর উম্মত অকলরে গুনা থাকি তরাইবা।”
22 আগর জমানার নবীর মাজদি মাবুদে যেলা বাতাইছলা, অখান ফলিবার লাগিউ ইতা অইবো। 23 মাবুদে বাতাইছলা, “হুনো, একজন আবিয়াতি সতী নারীর পেটো হুরুতা আইবো, তাইন এক পুয়ার জনম দিবা, ই পুয়ারে ডাকা অইবো ইম্মানুয়েল।” ই নামর মানি অইলো, আল্লা আমরার লগে আছইন।
24 বাদে ঘুম থাকি উঠিয়া ইউছুফে ফিরিস্তার হুকুম মাফিক বিবি মরিয়মরে শাদি করলা। 25 অইলে অউ পুয়ার জন্মর আগ পর্যন্ত তাইন মরিয়মর লগে কুনু মিলা-মিশা করলা না। সময় মত অউ পুয়ার জনম অইলো, তাইন অউ পুয়ার নাম রাখলা ইছা।