ঈশ্বর তাঁর বিশেষ সেবককে ডাকছেন
49
1 দূরবর্তী স্থানের সব লোকরা আমার কথা শোন|
পৃথিবীবাসী সবাই আমার কথা শোন!
আমি জন্মাবার আগেই প্রভু আমাকে তাঁর সেবা করতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন|
আমি মাতৃজঠরে থাকার সময়েই প্রভু আমার নাম ধরে ডাক দেন|
2 প্রভু আমাকে তাঁর কথা বলতে ব্যবহার করেন!
তিনি আমার মুখকে ধারালো তরবারির মতো তৈরী করেছেন|
তিনি আমাকে নিজের হাতে লুকিয়ে রেখে আমাকে রক্ষাও করেছেন|
প্রভু আমাকে একটি ধারালো তীরের মতো ব্যবহার করলেও,
তিনি আমাকে তাঁর তীরের থলিতে লুকিয়ে রাখেন|
3 প্রভু আমাকে বললেন, “ইস্রায়েল তুমি আমার ভৃত্য!
তোমার জন্য আমি যা করি তার জন্য আমি সম্মানিত হব|”
4 আমি বললাম, “আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি|
আমি নিজেকে ক্ষয় করেছি, কিন্তু কোন প্রয়োজনীয় কাজ করি নি|
আমি আমার সমস্ত শক্তি ব্যয করেছি|
কিন্তু আমি সত্যিকারের কিছুই করতে পারিনি|
তাই প্রভুকেই ঠিক করতে হবে|
তিনি আমাকে নিয়ে কি করবেন|
ঈশ্বরই আমার পুরস্কারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন|
5 প্রভু আমাকে আমার মাতৃগর্ভে সৃষ্টি করেছেন,
যাতে আমি তাঁর দাস হতে পারি
এবং যাকোব ও ইস্রায়েলকে পথ প্রদর্শন করে তাঁর কাছে ফিরিয়ে আনতে পারি|
প্রভু আমাকে সম্মান দেবেন|
ঈশ্বরের কাছ থেকে আমি আমার শক্তি পাব|”
6 প্রভু আমাকে বলেন, “তুমি আমার খুবই গুরুত্বপূর্ণ দাস|
ইস্রায়েলের লোকরা এখন বন্দী|
কিন্তু তাদের আমার কাছে আনা হবে|
যাকোবের পরিবারগোষ্ঠী আমার কাছেই ফিরে আসবে|
কিন্তু তোমার অন্য কাজ আছে, এর থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সেই কাজ!
আমি তোমাকে সমস্ত জাতির আলো হিসেবে তৈরি করব|
বিশ্ববাসীকে রক্ষা করতে তুমিই হবে আমার পথ|”
7 প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্র একজন, ইস্রায়েলের পরিত্রাতা বলেন, “আমার দাস ঘৃণিত|
সে শাসকদের সেবা করে|
লোকে তাকে ঘৃণা করে|
কিন্তু রাজারা তাকে দেখবে এবং তাকে সম্মান জানানোর জন্য উঠে দাঁড়াবে|
মহান নেতারা তার সামনে মাথা নত করবে|”
এই সব ঘটবে কারণ প্রভু, ইস্রায়েলের পবিত্রতম এই সব চান| এবং প্রভুকে বিশ্বাস করা যেতে পারে| তিনিই সে জন যিনি তোমাকে বেছে নিয়েছিলেন|
পরিত্রাণের দিন
8 প্রভু বলেন,
“একটা বিশেষ সময় আসবে, যখন আমি আমার দয়া দেখাব|
তখন আমি তোমাদের প্রার্থনার জবাব দেব|
বিশেষ দিন আসবে যখন আমি তোমাদের রক্ষা করব|
আমি তোমাদের সাহায্য করব, আমি তোমাদের নিরাপত্তা দেব|
লোকের সঙ্গে আমার যে চুক্তি আছে তার প্রমাণ হবে তোমরা|
যে দেশ এখন ধ্বংসপ্রাপ্ত,
সেই দেশকে তোমরা তার নিজের জমি ফিরিয়ে দেবে|
9 তোমরা কয়েদীদের বলবে:
‘কারাগার থেকে বেরিয়ে এসো|’
অন্ধকারে থাকা লোকদের তোমরা বলবে,
‘বেরিয়ে এসো অন্ধকার জগত থেকে!’
ভ্রমণ করতে করতে লোকে খাবে|
নিস্ফলা পাহাড়েও তারা খাবার পাবে|
10 লোকে ক্ষুধার্ত হবে না, লোকরা তৃষ্ণার্ত হবে না|
তাদের তপ্ত সূর্য ও বাতাস কষ্ট দেবে না|
কেন? কারণ ঈশ্বর তাদের আরাম দেবেন|
ঈশ্বর তাদের নেতৃত্ব দেবেন|
জলপ্রবাহগুলির কাছে তিনি তাদের নেতৃত্ব দেবেন|
11 আমি আমার লোকদের জন্য সড়ক বানাব|
পাহাড়গুলিকে করা হবে সমতল এবং নীচু
রাস্তাগুলিকে করা হবে উঁচু|
12 “দেখ! দূর দূর স্থান থেকে আমার কাছে লোকে চলে আসছে|
উত্তর ও পশ্চিম থেকে লোকরা আসছে|
মিশরের সীনীম দেশ থেকে লোক আসছে|”
13 স্বর্গ ও পৃথিবী সুখী হও!
পাহাড় চেঁচিয়ে ওঠ আনন্দে!
কেন? কারণ প্রভু তাঁর লোকদের আরাম দেবেন|
প্রভু গরীব লোকদের প্রতি সদয় হবেন|
14 কিন্তু সিয়োন এখন বলে, “প্রভু আমাকে ত্যাগ করেছেন|
আমার প্রভু আমাকে ভুলে গিয়েছেন|”
15 কিন্তু আমি বলি,
“কোন মহিলা কি নিজের শিশুকে ভুলতে পারে? না!
তার শরীর থেকে ভূমিষ্ট হওয়া শিশুকে ভুলতে পারে কোন নারী?
না! কোন নারী তার শিশুকে ভুলতে পারে না|
আমিও তোমাদের ভুলে যেতে পারি না|
16 এই দেখো, আমি নিজ হাতে তোমাদের নাম খোদাই করে রেখেছি!
তোমাদের কথা সব সময়ই ভাবি|
17 তোমাদের শিশুরা ফিরে আসবে, লোকরা তোমাদের পরাজিত করবে
কিন্তু তারা তোমাদের একাকী ফেলে যাবে|”
18 তাকাও! নিজেদের চারিদিকে তাকাও!
তোমাদের সব ছেলেমেয়েরা একত্রিত হয়ে তোমাদের কাছে আসবে|
প্রভু বলেন,
“নিজের জীবনে তোমাদের কাছে এই প্রতিশ্রুতি করছি:
তোমাদের ছেলেমেয়েরা হবে রত্নের মতো, যেটা তোমরা গলায় বেঁধে রাখবে|
তোমাদের ছেলেমেয়েরা একজন বধূর গলার মূল্যবান হারের মতো হবে|
19 “এখন তোমরা পরাজিত ও তোমরা ধ্বংস হয়েছো|
তোমাদের দেশ ধ্বংস হয়েছে|
কিন্তু কিছু কাল পরে, তোমাদের দেশে তোমরা অনেক বেশী লোক পাবে
এবং যে সমস্ত লোক তোমাদের ধ্বংস করেছিল তারা অনেক দূরে সরে যাবে|
20 তোমরা হারিয়ে যাওয়া শিশুর শোকে দুঃখিত ছিলে|
সেই শিশুরাই কিন্তু তোমাদের বলবে,
‘এই জায়গা বড্ড ছোট!
আমাদের বসবাসের জন্য বড় জায়গা দাও!’
21 তারপর তোমরা নিজেরাই বলবে,
‘কে আমাদের এইসব শিশুদের দিয়েছে?
আমি বিচ্ছিন্ন ছিলাম, নির্জনে ছিলাম|
পরাস্ত হয়ে নিজেদের লোক থেকে দূরে ছিলাম|
তাই এই শিশুদের কে দিলেন?
দেখো, আমি একা পড়েছিলাম|
কোথা থেকে এই শিশুরা এসেছিল?’”
22 আমার প্রভু, সদাপ্রভু বলেন,
“দেখ, আমার হাত জাতিদের ওপর ঢেউ তুলবে|
আমি সব মানুষকে দেখাতে পতাকা তুলব|
তখন তারা তোমাদের শিশুদের নিয়ে আসবে!
তারা তোমাদের শিশুদের কাঁধে করে আনবে,
বাহু দিয়ে শিশুদের ধরে রাখবে|
23 তাদের সম্রাটরা শিক্ষক হবেন|
রাজকুমারীরা তাদের যত্ন করবে|
সেই সব রাজা ও রাজকুমারীরা তোমাদের সামনে শ্রদ্ধায মাথা নত করবে|
তারা তোমাদের পায়ের পাতার ধূলিতে চুম্বন করবে|
তখন তোমরা বুঝবে যে আমিই প্রভু|
তারপর তোমরা জানবে, আমার ওপর আস্থাশীল হওয়া কোন লোকই হতাশ হবে না|”
24 যখন কোন বলবান সেনা যুদ্ধ জয় করে প্রচুর সম্পদ নিয়ে আসে,
তখন তোমরা তা ছিনিয়ে নিতে পারো না|
যখন কোন শক্তিশালী সেনা কোন বন্দীকে পাহারা দেয়,
তখন বন্দীটি পালিয়ে যেতে পারে না|
25 কিন্তু প্রভু বলেন,
“বন্দী পালিয়ে যাবে|
কেউ একজন বন্দীদের শক্তিশালী সেনার কাছ থেকে দূরে নিয়ে যাবে|
কি করে ঘটবে এইসব? আমি তোমাদের হয়ে যুদ্ধ করে দেবো|
আমিই তোমাদের শিশুদের বাঁচাবো|
26 “তোমাদের যারা দাবিয়ে রেখেছিল
আমি তাদের নিজেদের মাংস খেতে বাধ্য করব|
দ্রাক্ষারস পান করে মাতাল হবার মত তারা তাদের নিজেদের রক্ত খেয়ে মাতাল হবে|
তখন সবাই জেনে যাবে যে প্রভু তোমাদের পরিত্রাতা|
প্রত্যেকটি লোক জেনে যাবে যে যাকোবের শক্তিশালী ‘একজন’ তোমাদের রক্ষা করেছিলেন|”